মণিপাল হাসপাতাল কলকাতায় মেডিক্যাল এথিক্স নিয়ে বিশেষ আলোচনা অনুষ্ঠিত হলো হার্ট ফেলিওর ও ট্রান্সপ্লান্টেশন সোসাইটির বার্ষিক সভায়
কলকাতা, ১৬ই আগস্ট ২০২৫: মণিপাল হাসপাতাল, ইএম বাইপাস এবং সোসাইটি ফর হার্ট ফেলিওর অ্যান্ড ট্রান্সপ্লান্টেশনের যৌথ উদ্যোগে “মেডিক্যাল এথিক্স: এ ওয়াইড-রিচিং পার্সপেক্টিভ” শীর্ষক এক বিশেষ আলোচনার আয়োজন করা হয়। কলকাতায় অনুষ্ঠিত এই বার্ষিক সভায় চিকিৎসা জগতের বিশিষ্ট বিশেষজ্ঞ, প্রশাসক ও নৈতিকতাবিদরা অংশ নেন। সেশনের সভাপতিত্ব করেন ডা. কুনাল সরকার, সিনিয়র কনসালট্যান্ট – কার্ডিওভাসকুলার ও থোরাসিক সার্জারি, মণিপাল হাসপাতাল, ইএম বাইপাস এবং সোসাইটির অর্গানাইজিং সেক্রেটারি। অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয় ডা. জুলিয়াস পুনেন, সোসাইটির প্রেসিডেন্ট-এর নেতৃত্বে।
আলোচনার মূল বিষয় ছিল গুরুতর চিকিৎসা পরিস্থিতিতে সবচেয়ে নৈতিকভাবে জটিল সিদ্ধান্তগুলির একটি—অঙ্গ প্রতিস্থাপন বা মেকানিক্যাল সার্কুলেটরি সাপোর্ট (MCS) রোগীদের ক্ষেত্রে জীবন রক্ষাকারী থেরাপি প্রত্যাহার। লেফট ভেন্ট্রিকুলার অ্যাসিস্ট ডিভাইস (LVAD) এবং এক্সট্রাকরপোরিয়াল মেমব্রেন অক্সিজেনেশন (ECMO)-এর মতো আধুনিক জীবনরক্ষাকারী প্রযুক্তি বন্ধ করার প্রয়োজনীয়তা ও রোগীর ইচ্ছার সঙ্গে সম্ভাব্য দ্বন্দ্ব নিয়েই মূলত আলোচনা হয়।
গত কয়েক বছরে এই প্রযুক্তিগুলি উন্নত হার্ট ফেলিওর রোগী কিংবা প্রতিস্থাপনের অপেক্ষায় থাকা রোগীদের বাঁচার সম্ভাবনা অনেক বাড়িয়েছে। তবে একই সঙ্গে এগুলি জটিল নৈতিক প্রশ্নও তুলেছে—কবে এই সাপোর্ট প্রত্যাহার করা উচিত। আলোচনায় আইনি, নৈতিক ও চিকিৎসাগত দিক ছাড়াও রোগীর স্বাধীনতা ও ইনফর্মড কনসেন্টের গুরুত্বকে বিশেষভাবে তুলে ধরা হয়।
প্যানেলিস্টদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন – ডা. কৌশিক বিশ্বাস (ওয়েস্ট বেঙ্গল মেডিক্যাল কাউন্সিল), মিঃ কমল দাশোরা (ক্লাস্টার ডিরেক্টর – মণিপাল হাসপাতালস, মুকুন্দপুর ক্লাস্টার), ডা. সুদেষ্ণা লাহিড়ী (মেডিক্যাল সুপারিনটেনডেন্ট – মণিপাল হাসপাতাল, ইএম বাইপাস), ডা. তন্ময় ব্যানার্জি (সিনিয়র কনসালট্যান্ট – ক্রিটিক্যাল কেয়ার, মণিপাল হাসপাতাল, ইএম বাইপাস), মিঃ মিলন মুখার্জি (সিনিয়র অ্যাডভোকেট) এবং অধ্যাপক (ডা.) মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় (ডিরেক্টর – ROTTO ও IPGMER)।
সেশন মডারেটর হিসেবে বক্তব্য রাখতে গিয়ে ডা. কুনাল সরকার বলেন – “ভারতে প্রতিবছর দুই লক্ষের বেশি মানুষ এন্ড-স্টেজ হার্ট ফেলিওরে ভোগেন, অথচ প্রতি বছর এক হাজারেরও কম হার্ট ট্রান্সপ্লান্ট হয়। যদিও LVAD ও ECMO প্রযুক্তি বেঁচে থাকার হারকে বদলে দিয়েছে, কিন্তু যখন সুস্থতার সম্ভাবনা আর থাকে না তখন তা গভীর নৈতিক সংকট তৈরি করে। শুধু প্রযুক্তিগত উন্নতি যথেষ্ট নয়—আমাদের সিদ্ধান্তে রোগীর মর্যাদা, আরাম ও ইচ্ছাকে সর্বাগ্রে রাখতে হবে। চিকিৎসা সবসময় মানবিক হতে হবে, যান্ত্রিক নয়। আমাদের দায়িত্ব শুধু জীবন দীর্ঘায়িত করা নয়, বরং তার গুণগত মান রক্ষা করা।”
মণিপাল হাসপাতালস – ইস্ট-এর চিফ অপারেটিং অফিসার ডা. অয়নাভ দেবগুপ্তা বলেন – “এটি শুধুমাত্র অপারেশন থিয়েটার বা আইসিইউ-র বিষয় নয়। চিকিৎসা নৈতিকতার সিদ্ধান্ত নেওয়ার অর্থ যতটা শোনার, ততটাই নিরাময়ের। আমরা বিশ্বাস করি ডাক্তার, রোগী ও পরিবারের মধ্যে খোলা আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত—যেখানে সহানুভূতি, সরলতা এবং ব্যক্তিগত মূল্যবোধের প্রতি সম্মান বজায় থাকে। আমরা পূর্ব ভারতে মণিপাল অর্গান শেয়ারিং অ্যান্ড ট্রান্সপ্লান্ট (MOST) উদ্যোগকে এগিয়ে নিতে চাই।”
সেশনের সমাপ্তিতে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, সুনির্দিষ্ট নীতি-নির্দেশিকা প্রণয়ন এবং অ্যাডভান্স কেয়ার প্ল্যানিং বাস্তবায়নের উপর জোর দেওয়া হয় যাতে রোগীর মূল্যবোধ অনুযায়ী নৈতিক চিকিৎসা সিদ্ধান্ত নেওয়া যায় এবং স্বাস্থ্যকর্মীদের ভূমিকাও সুরক্ষিত থাকে। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ স্মারক হয়ে রইল যে নৈতিক চিকিৎসার ভবিষ্যৎ নির্ভর করে বিজ্ঞান, সহানুভূতি এবং সমাজের সক্রিয় অংশগ্রহণের সুসমন্বয়ের উপর।
মণিপাল হাসপাতাল সম্বন্ধে:
মণিপাল হাসপাতালস ভারতের শীর্ষস্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলির অন্যতম। প্রতিবছর ৭০ লক্ষের বেশি রোগীকে সেবা দিয়ে থাকে। বর্তমানে ১৯টি শহরে ৩৮টি হাসপাতাল, ১০,৫০০+ শয্যা, ৭,২০০+ চিকিৎসক এবং ২০,৫০০-এর বেশি কর্মী নিয়ে বিশাল নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। সাশ্রয়ী খরচে উচ্চমানের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানই এর মূল লক্ষ্য। মণিপাল হাসপাতাল NABH, AAHRPP স্বীকৃত এবং অধিকাংশ ইউনিটই NABL, ER, ব্লাড ব্যাংক স্বীকৃত ও নার্সিং এক্সেলেন্সে সম্মানিত।
PIC SANTANU DOLUI
MOBILE NO---7499910422
Comments
Post a Comment